পাত্রীর থেকে পাত্র বয়সে বড় হওয়াটাই আমাদের সমাজের সো কলড নিয়ম। পাত্রের থেকে পাত্রী বড় হয়েছ কি মরেছ! কিন্তু এহেন সমাজও বেশ হিপোক্রেট হয়ে পড়ে যখন পাত্রের বয়স পাত্রীর থেকে পনেরো কুড়ি বছর বেশী হয়ে যায়। তাহলে কি দাঁড়ালো? পাত্রীর থেকে পাত্রের বয়স বড় হওয়া কাম্য কিন্তু অত্যন্ত বেশী নয়।
আচ্ছা, কিন্তু এই হিপোক্রেট সমাজকে কাঁচকলা দেখিয়ে দিব্যি এক ছাদের নীচে ৩০ বছর সংসার করে চলেছেন দীপঙ্কর দে ও দোলন রায়। ২৭ বছর সহবাসের পরে ২০২০-র ১৭ জানুয়ারি আইনত দম্পতি হিসেবে স্বীকৃতি পান তারা। সোমবার সেই সেলিব্রেশনের সময় কাঁচা হলুদ পোশাকে জুটি বেঁধেছিল তন্বী দোলন ও চিরসবুজ দীপঙ্কর।
রংমিলন্তিই কি মনের মিলের ইঙ্গিত? প্রশ্ন উঠলে দোলন বলেন, “শাড়িটি বেদান্ত মঠ থেকে উপহার পেয়েছিলাম। হঠাৎ কী মনে হল, পরলাম। ওমা! দেখি টিটোদাও প্রায় একই রঙের একটি গেঞ্জি বেছে নিয়েছে! হয়ে গেল রংমিলন্তি।”
এই বিয়ে আর বয়সের ব্যবধান কত কাটাছেঁড়া করেছে দুটি ভালোবাসার পায়রার প্রাণ। অল্প হেসে দোলন বললেন, “এখন আর আমায় কিছু বলতে হয় না! গতকালের কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। ভাইরাল সেই সব ছবি। প্রচুর ভালবাসা, আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা। তারই ফাঁকে একজন বাঁকা কথা বলেছিলেন। দেখলাম, বাকিরাই মুখের উপরে জবাব দিয়ে তাঁকে চুপ করিয়ে দিয়েছেন।”
টলি পাড়ায় নিত্য দিন ভাঙনের খবর। কখনও বিবাহ বিচ্ছেদ কখনও প্রেমে ভাঙন। এমন ভাঙনকালেও কী করে অটুট দীপঙ্কর-দোলন? নাকি পুরোটাই নিছক অভ্যাস? “নজর দেবেন না! আমরা খুব ভাল আছি। একে অন্যকে ছাড়া বাঁচতে পারব না”, আকুতি ঝরেছে দোলনের গলায়।
দোলনের সংযোজন, “ধারাবাহিকের দৌলতে সবাই ভাবেন মানুষ হয় শুধু ভাল, নয় শুধুই খারাপ! আদতে যে সবাই ভাল-মন্দ মিশিয়ে ধূসররঙা এটাই কেউ বোঝেন না। এটাও বোঝেন না যে ভালর পাশাপাশি মন্দটাও মানাতে হয়। তবেই সম্পর্ক পূর্ণতা পায়, অটুট থাকে। যুক্তি, মা-বাবার সঙ্গে থাকাটাও তো এক সময় অভ্যেস হয়ে যায়। সেখানেও ঠোকাঠুকি লাগে। কেউ কি ফেলে দেন তাঁদের?”
অভিনেত্রীর আরও বক্তব্য, “আমায় যেমন টিটোদা শাসন করে তেমনি সোহাগও। আমিও তাই। ফলে, মিলেমিশে থাকতে থাকতে এত গুলো বছর কোথা দিয়ে যেন কেটে গেল!”